Bangla Runner

ঢাকা , সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | বাংলা

শিরোনাম

দালালি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই : শেখ হাসিনা বিতর্ক কী? কেন করবো? বিতর্ক + বিনয় = বড় মানুষ ঢাবি ব্যান্ড সোসাইটি’র এগারো সদস্যের নতুন কমিটি ঢাবি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মাসুম, সম্পাদক ফুয়াদ  মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ফুয়াদ, সম্পাদক মেহেদী ফ্রান্সের বিপক্ষে জয় পেয়েও শেষ ষোলোয় উঠতে পারলো না তিউনিশিয়া ডেনমার্ককে হারিয়ে ১৬ বছর পর শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়া চট্টগ্রামে নেপাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ ডিআরইউ’র সভাপতি নোমানি, সম্পাদক সোহেল
Home / প্রকৃতি ও পরিবেশ

কোরাল ব্লিচিং: বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরূপ প্রভাব

সিয়াম শাহরিয়ার
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৯ Print


সমুদ্রের তলদেশের বা কোন সি-অ্যাকুরিয়ামের যা আমাদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে তা হল এর বিচিত্র রঙের সমাহার। এর বিভিন্ন আকার আকৃতি ও রঙের কাঠামোগুলো আসলে কোরাল বা প্রবাল। কোরাল বা প্রবালগুলোই রঙের উৎস। আরো ভালো করে বলতে গেলে বলতে হয়, কোরালের টিস্যুর ভেতরে অবস্থান করা বিভিন্ন প্রজাতির শৈবাল জলের তলে এই রঙ্গিন দুনিয়ার জন্যে দায়ী।

রঙ-বেরঙ্গের এই শৈবালের সাথে কোরালেরা 'এন্ডোসিম্বায়োটিক (Endosymbiotic)' সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাদের ঠাঁই দেয় নিজের শরীরের টিস্যুর ভেতরে। সেখানে ঢুকে শৈবালেরা কোরালগুলোকে পুষ্টি ও শক্তির যোগান দেয়। নানা প্রজাতির কোরাল মিলে একত্রে যে বৃহৎ কাঠামো গঠন করে তাকে বলা হয় কোরাল রিফ। এর সবচেয়ে বড়টির দেখা মেলে অস্ট্রেলিয়ার ইস্ট কোস্টে যা গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ নামে খ্যাত এবং ২ হাজার ৩০০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। 

কোরাল রিফ গুলো পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্রময় ইকোসিস্টেমগুলোর একটি, এজন্য এদের সমুদ্রের রেইন ফরেস্টও বলা হয় । যদিও কোরাল রিফগুলো সমুদ্রের মাত্র ০.১% কিন্তু এরা ২৫% সামুদ্রিক প্রজাতির আবাসস্থল। কোরাল পলিপ ও শৈবালের এ আন্তসম্পর্ক তাপমাত্রা সংবেদী। কোরালেরা একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রা পর্যন্ত শৈবালের সাথে এই সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।

আশেপাশের পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে কোরালের পলিপেরা এই সব শৈবালকে মুক্ত করে দেয়। তাদের শরীরে ঠাঁই দেয় না। ফলে কোরালেরা ফিরে আসে তাদের আসল  à¦¸à¦¾à¦¦à¦¾ রঙে। এটাকেই বলে 'কোরাল ব্লিচিং'। কোরাল ব্লিচিং এর অন্যতম কারণ হলো 'গ্লোবাল ওয়ার্মিং' বা 'বৈশ্বিক উষ্ণায়ন'। কারণ গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রভাবে সমুদের  à¦ªà¦¾à¦¨à¦¿à¦° তাপমাত্রা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

কোরাল ব্লিচিংয়ের ফলে কোরাল থেকে যে কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং এমোনিয়াম পেতো, সেগুলো না পেয়ে মারা যায় শৈবালেরা। এ দিকে শৈবাল থেকেও সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় তৈরি পুষ্টি না পেয়ে মারা যেতে থাকে কোরালেরা। কোরালের ৯০% শক্তির যোগান দেয় এই রঙ্গিন শৈবালগুলো। সেটা না পেয়ে মরে যায় কোরাল। তাদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর উপায় হচ্ছে, আবার শরীরে শৈবাল জুড়ে গিয়ে বসে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শুরু করা। কিন্তু একবার কোরাল ব্লিচিং শুরু হলে কোরালের গায়ে ছত্রাকেরা এসে বাসা বেঁধে ফেলে। ফলে শৈবালেরা আর সেখানে অবস্থান গ্রহণ করতে পারে না।

আমরা শুধু স্থলভাগেই গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে পরিবেশের বিপর্যয় নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু এটার কারণে বিপুল জলরাশির জগতেও যে বিপর্যয় ঘটছে, সেটা আমাদের অনেকেরই অজানা থেকে যাচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী 'গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ'-এর ৯০% কোরাল আক্রান্ত হয়েছে এই ব্লিচিংয়ে। তার মধ্যে ২৯% কোরাল মারা গেছে এভাবে ব্লিচড হয়ে যাবার কারণে। এবং বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০০ বছরে কোরালের কোন অস্তিত্বই থাকবে না । এ অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সকলের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

লেখক: শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
shahriarsiam234@gmail.com

আরও পড়ুন আপনার মতামত লিখুন

© Copyright -Bangla Runner 2021 | All Right Reserved |

Design & Developed By Web Master Shawon