Bangla Runner

ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ | বাংলা

শিরোনাম

বিশ্বের বৃহত্তম সাত স্টেডিয়াম যুদ্ধ লাগলেই কেন বাড়ে স্বর্ণের দাম? তথ্যপঞ্জী লেখার নিয়ম বিতর্কের বিষয় ব্যাংক বিতর্কে শব্দ ব্যবহারে সচেতন হতে হবে একজন ভাল লেখক হতে চাইলে এক নজরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক নজরে সুন্দরবন পরাগায়ন কাকে বলে? শৈবাল কী?
Home / ক্যাম্পাস

সাক্ষরতা দিবসের আলোচনায় ঢাবি শিক্ষক:

ডেকে এনে বেকার বানাচ্ছে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ Print

সাক্ষরতা দিবসে আয়োজিত এফ রহমান ডিবেটিং ক্লাবের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষক মেহেদি হাসান। ছবি: রাতুল সরকার | [বক্তব্যের ভিডিও লিংক নিচে যুক্ত করা হলো]


এফ রহমান ডিবেটিং ক্লাবের আয়োজনে à§«à¦® আহম্মদ ফজলুর রহমান স্মারক সাক্ষরতা দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত রোববার। এতে à¦•লেজ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ ও রানার আপ হয়েছে প্রত্যয় ডিবেটিং ক্লাব। আর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিতর্ক একটি তার্কিক সংগঠন (জগন্নাথ হল, ঢাবি) এবং রানার আপ হয়েছে কবি সুফিয়া কামাল হল ডিবেটিং ক্লাব (ঢাবি)।

সমাপনী অনুষ্ঠানে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল সাক্ষরতা ও বাংলাদেশের শিক্ষা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ফাইনালে ‍বিতর্কের  à¦¬à¦¿à¦·à§Ÿà¦“ ছিল শিক্ষা কেন্দ্রীক।  ‘এই সংসদ উচ্চশিক্ষার সার্বজনীনতায় বিশ্বাস করে না’ বিষয়ের ওপর বিতার্কিরা যেমন বলেছে পুরষ্কার প্রদানের পূর্বে আগত অতিথিরাও এ বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য রেখেছেন। ইমদাদুল হক চঞ্চলের সভাপতিত্বে এবং মাযহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে à¦¸à¦¾à§œà¦¾ জাগানো এক বক্তৃতা রেখেছেন à¦†à¦°à¦¬à¦¿ বিভাগের প্রভাষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর মেহেদি হাসান। আইকন প্লাস ও এনআরবিসি ব্যাংকের সহযোগিতায় তিন দিন ব্যাপী এ বিতর্ক উৎসবের মিডিয়া পার্টনার ছিল বাংলা রানার। বাংলা রানারের পাঠকদের জন্য অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মেহেদি হাসানের বক্তব্যের লিখিত রূপ দিয়েছেন- এম.এস.আই খান

“আমি নিজেই কিছু দিন আগে ছাত্র ছিলাম। ইন্টারমিডিয়েটে একেক বছর যদি ৭০ হাজার, ৮০ হাজার পাশ করে বা এক লক্ষ, দুই লক্ষ। আমি সারাদেশে এত পরিমাণ à¦¬à¦¿à¦¶à§à¦¬à¦¬à¦¿à¦¦à§à¦¯à¦¾à¦²à§Ÿ করে দিলাম যাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে গ্রাজুয়েট হয়ে বের হল। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, প্রতিবছর দুই লক্ষ শিক্ষার্থীকে আমি গ্রাজুয়েশন বা ডিগ্রি à¦¦à¦¿à¦šà§à¦›à¦¿ কিন্তু এই দুই লক্ষের কত জনের কর্মসংস্থান বাস্তবে আমাদের দেশে রয়েছে? 

আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, বিসিএস পরীক্ষায় লড়তে হবে, দু চারটা ব্যাংকে প্রতিযোগিতা করতে হবে। à¦«à¦¾à¦¸à§à¦Ÿ ক্লাস, সেকেন্ড ক্লাস ও আরো কিছু, সব মিলিয়ে যে পরিমাণ শিক্ষার্থীকে আপনি উচ্চ শিক্ষা দিচ্ছেন তার কত ভাগকে আপনি কর্মসংস্থান তৈরি করে দিতে পারছেন? আপনি যদি কর্মসংস্থান দিতে না পারেন তাহলে কেন এত পরিমাণ গ্রাজুয়েট বানাবেন? আপনি ইচ্ছে করে ডেকে এনে কাউকে বেকার বানিয়ে দিচ্ছেন।

এই বেকারদের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা আমি দুটো জায়গাতে দেব। প্রথম দায় হচ্ছে পলেসি মেকার এবং à¦¶à¦¿à¦•্ষকদের। আমি নিজের ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করব। আসলে আমি কতটা চিন্তা করছি যে আমি যাদেরকে পড়াচ্ছি, চার বছর পর আমার এই শিক্ষার্থী আসলে কোন ক্ষেত্রে à¦šà¦¾à¦•রি করবে? যদি আমি নিজে নিজেকে এই প্রশ্ন করি তাহলে সবচেয়ে বেশি ফলাফল আমার কাছ থেকে আসবে। আমি যদি প্রতিদিন ১০ মিনিট করেও চিন্তা করি যে, আমি আমার শিক্ষার্থীদেরকে চার বছর পরে কোন জায়গায় পাঠাবো, কোন জায়গাটাতে বলবো যে- এখানে তোমার সুযোগ রয়েছে, এখানে তুমি ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবে। à¦à¦Ÿà¦¿ যদি একজন শিক্ষক হিসেবে আমার কাছে না থাকে কিংবা একজন পলেসি মেকার হিসেবে এই জনসমাজ, তরুণ সমাজের কাছে আমার না থাকে তাহলে ব্যর্থতাটা সেখানে রয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে আমি যাদের প্রশ্নবিদ্ধ করবো তারা হচ্ছে শিক্ষার্থী সমাজ। আপনি মনে করুন যে মাধ্যমিক লেভেল, উচ্চ মাধ্যমিক লেভেল পার করে যখনেই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন, আপনার মাথায় চিন্তা থাকে- ‘সব ঠিক আছে, à¦†à¦®à¦¾à¦° কেবলমাত্র কাজ হচ্ছে পাবলিক পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা’। আমার একাডেমিক পড়াশুনা, ডিপার্টমেন্টের পড়াশুনা এগুলো নিয়ে কাজ করার কোন দরকার নেই। আমি একজন ব্যকবেঞ্চার হব, আমি পিছনের দিকে বসব। তারপর হচ্ছে আমার একাডেমিক পড়াশুনা নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে হবে না। à¦•োন রকম একটা প্রান্তিক ফলাফল নিয়ে দুই, তিন বা এরকম একটা ফলাফল নিয়ে বের হয়ে যাব। 

তারপর আমি পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। আমি বিসিএস, ব্যাংক জব এগুলো নিয়ে চিন্তা করব। আপনি নিজেকে একবার প্রশ্ন করুন- আপনি কি কখনো ভেবেছেন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে বসে আপনার শিক্ষকদের কাছে জানতে চেয়েছেন উদাহরণ স্বরূপ- আমি ইংরেজি বিভাগে পড়ছি/ à¦¬à¦¾à¦‚লা বিভাগে পড়ছি / আরবি বিভাগে পড়ছি / দর্শনে পড়ছি / ইতিহাসে পড়ছি, আপনি কি কখনো জানতে চেয়েছেন চার বছর পর আমি ঠিক কোন ক্ষেত্রে কাজ করব? তাহলে আমি কেন এখানে ভর্তি হয়েছি? আমি যখন পড়ার বিষয় পছন্দ করি তখন সেটার প্রতি আমার ভাললাগা রয়েছে, টার্গেট রয়েছে। আমি à¦à¦‡ বিভাগ থেকে গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করব এবং à¦à¦‡ নির্দষ্ট পেশায় যোগদান করব। যদি এরকম ঠিক করা কোন টার্গেট, পেশা না থাকে তাহলে এই দায়বদ্ধতা আপনাদের (শিক্ষার্থী)।

দায়বদ্ধতা আমি দুটি জায়গায় দিয়ে আমি এখন সমাধানের কথা বলব। সেটা হচ্ছে- একটি ভারতীয় বিজ্ঞাপন আপনারা অনেকই হয়ত দেখে থাকবেন, একটা টি-শার্ট ও জিন্সের অর্থাৎ পোশাকের শো-রুম, সেখানে একদিন à¦¦à§‡à¦–া য়ায় শুধুমাত্র à¦à¦•্সএল সাইজের à¦•ালো রঙের টিশার্ট ছাড়া আর কিছু নেই। সবাই শোরুমে যেয়ে জিন্স খোঁজে কিন্তু সেখানে পায় কেবল ব্লাক টি-শার্ট। à¦¶à¦°à§à¦Ÿà¦¸ খোঁজে সেটা নেই, ভিন্ন কালারের টি-শার্ট খোঁজে সেটা নেই। ক্রেতারা জিজ্ঞেস করে- এখানে তো এই এই পোশাক ছিল কিন্তু এখন কেন নেই? তখন তিনটা বাচ্চা তারা এসে বলে- আপনারা যেমন এখন একটামাত্র অপশন দেখে বলছেন এখানে তিনটা ছিল কিন্তু এখন নেই কেন? আমাদের জীবনে আমরা যখন পড়াশুনা শুরু করি তখন আমাদের পিতামাতা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে- আমার সন্তান ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক হবে! কিন্তু আমাদের কোন নিজস্ব পছন্দ থাকে না। আমি আসলে কি হতে চাই, আমার যদি কোন সৃজনশীল গুণ থাকে সে জায়গায় কেন আমি যেতে পারছি না?

এই উদাহরণটি টানার অর্থ হচ্ছে- উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে আপনার জন্য à¦ªà¦²à¦¿à¦Ÿà§‡à¦•নিক-কারিগরি দিক খোলা থাকবে, আপনার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তিগত দিক খোলা থাকবে। আপনার জন্য যখন অনেকগুলো সুযোগ খোলা থাকবে তখন আপনি চিন্তা করতে পারবেন আমি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তাহলে পাঁচ বছর পর à¦à¦‡ জায়গাতে থাকতে পারব, আর যদি পলিটেকনিকে পড়ি তাহলে পাঁচ বছর পরে নিজের জন্য কিছু একটা উপার্জন করতে পারব। এ রকম বিষয়গুলো যদি আমি শিক্ষার্থীদের কাছে দিতে পারি তাহলে তার যেটা দরকার সেটা চিন্তা করতে পারবে। তাই প্রথমেই আমাদের চিন্তা করতে হবে। যখন আমাদের কাছে সুযোগ খোলা থাকে না তখন এই পরিস্থিতি আসে এবং সেখানটায় আমরা দেখি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় à§§à§«à§¦à§¦ সিটের জন্য ৬ লক্ষ আবেদন করে।

আজকে যারা কেন্দ্রেীয় গ্রন্থাগার নিয়ে কথা বলছিলেন যে, ৮টায় লাইব্রেরি খুলবে কিন্তু ৬টা থেকে সিরিয়াল পড়ে। যদি আমি আপনাদের প্রশ্ন করি- ৬টা থেকে যে সিরিয়াল পরে সেটা কি লাইব্রেরির কোন বই পড়ার জন্যে? তাহলে সেখানে কেন যাচ্ছে? কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এমন একটা জায়গা যেখানে মানুষ জ্ঞান আরোহন করতে যাবে, জ্ঞান চর্চা করবে।  à¦†à¦ªà¦¨à¦¿ সেখাটায় চাকরির পড়ার জন্য যাচ্ছেন। ঠিক আছে, à¦†à¦ªà¦¨à¦¿ সরাকারে বলেন, এমন একটা জায়গা করে দিতে যেখানে à¦¸à¦°à¦•ারের চাকরি করার জন্য পড়াশোনা করবে। সেখানে à¦ªà¦¾à¦¬à¦²à¦¿à¦• সার্ভিসের জন্য পড়াশুনা করবে যা কেন্দ্রীয়  à¦²à¦¾à¦‡à¦¬à§à¦°à§‡à¦°à¦¿à¦° মত হবে à¦¨à¦¾à¥¤ à¦•েন্দ্রীয় লাইব্রেরি যেখানটায় অনেক জ্ঞান থাকে, সেই জ্ঞান নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা যাবে। 

আপনি তিন তলায়, দুই à¦¤à¦²à¦¾à§Ÿ যেয়ে দেখেন। সেখানে যে রেফারেন্স বই আছে সেগুলোর উপর বালির স্তূপ পড়ে আছে। শিক্ষার্থীরা সেগুলোকে ধরেও দেখে না। à¦†à¦®à¦°à¦¾ যদি সেগুলোকে ব্যবহার না করি তাহলে এই লাইব্রেরির কি দরকার? আমি প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অনুরোধ করব, নিজেকে অন্তত একবার প্রশ্ন করবেন এই দায়িত্বটুকু আপনারও ছিল কি না? à¦†à¦ªà¦¨à¦¿ যে নিজেকে এই রকম একটি à¦…মানবিক প্রতিযোগিতার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছেন à¦¯à§‡à¦–ানটায় আপনি ৪ লক্ষের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে পনেরশ’র মধ্যে কেউ একজন হবেন! তারপর নিজের ক্যারিয়ার সাজাবেন। 

এটা চিন্তা করাও বেশ কঠিন যে আপনি এত লম্বা একটা প্রতিযোগিতা করে তারপর সেখান থেকে বের হয়ে আসবেন! কেন আপনি চিন্তা করতে পারেন না যে আপনি একজন উদ্যোগতা হবেন, কেন à¦šà¦¿à¦¨à§à¦¤à¦¾ করছেন à¦¨à¦¾ আপনি ভিন্ন ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন? à¦•েন à¦šà¦¿à¦¨à§à¦¤à¦¾ করছেন à¦¨à¦¾ আপনি à¦à¦•জন ভাল গবেষক হবেন একজন শিক্ষাবিদ হবেন। কেন অন্য অপশন নিয়ে চিন্তা করছেন না, কেন শুধু à¦à¦•টা অপশন নিয়ে নিজের জীবনটা এভাবে বিকিয়ে দিচ্ছেন? আমি আপনাদের সাবাইকে এ বিষয়ে ভাবার অনুরোধ রাখছি এবং বিশ্বাস করি যদি এগুলো নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা চিন্তা করতে শুরু করে শিক্ষকরা চিন্তা করে, পলেসি মেকাররা তাদের জায়গা থেকে চিন্তা করে তবে অবশ্যই বাংলাদেশে পরিবর্তন আসবে।”

আরও পড়ুন আপনার মতামত লিখুন

© Copyright -Bangla Runner 2021 | All Right Reserved |

Design & Developed By Web Master Shawon