Bangla Runner

ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ | বাংলা

শিরোনাম

বিশ্বের বৃহত্তম সাত স্টেডিয়াম যুদ্ধ লাগলেই কেন বাড়ে স্বর্ণের দাম? তথ্যপঞ্জী লেখার নিয়ম বিতর্কের বিষয় ব্যাংক বিতর্কে শব্দ ব্যবহারে সচেতন হতে হবে একজন ভাল লেখক হতে চাইলে এক নজরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক নজরে সুন্দরবন পরাগায়ন কাকে বলে? শৈবাল কী?
Home / ক্যাম্পাস

সন্ত্রাস দমনে চার প্রস্তাব:

আগে সন্ত্রাস করেছে ছাত্রদল এখন করছে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল

ঢাবি প্রতিনিধি
বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯ Print


দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগে ছাত্রদল সন্ত্রাস করত আর এখন ছাত্রলীগ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, “ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করেত চাই না, আমরা ছাত্র সন্ত্রাসকে বন্ধ করতে চাই। ছাত্র সংগঠন করার নামে হলে হলে যে টর্চার সেল আছে, যে দুর্নীতির আখড়া আছে সেটাকে বন্ধ করতে চাই। এই সন্ত্রাস কে করে? এই সন্ত্রাস মূলত করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন। বিএনপির আমলে ছাত্রদল করেছে এখন ছাত্রলীগ করছে। এর বাইরে আমরা আরেকটা সংগঠনের নাম জানি- ছাত্রশিবিরের কথা। যখন তাদের সুযোগ ছিল তারাও ইচ্ছামত সন্ত্রাস করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু উদাহরণ আছে। হয়ত সুযোগ পেলে আবারও সন্ত্রাস করবে।”

আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত গণরুম-গেস্টরুম সমস্যা নিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের এক উম্মুক্ত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ওই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি (সহ-সভাপতি) নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খান, ফারুক হাসান, মশিউর রহমান, ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।

আসফি নজরুল অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, ‘‘আমার কথা হচ্ছে আপনারা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলেন। আজকে ছাত্রলীগ সন্ত্রাস করছে আপনারা ছাত্রদলকে সাথে নিয়ে, সবাইকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করেন। ভবিষ্যতে যখন ছাত্রদল আন্দোলন করবে তখন ছাত্রলীগকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করবেন। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে হবে। বিশুদ্ধবাদী মনোভাব রেখে দিনে দিনে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে পারবেন। যেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে, হলে সন্ত্রাস হয় সেই দেশ উন্নত দূরের কথা সেই দেশ সভ্য কি না সেই প্রশ্ন আমাদের করতে হবে।’’

আইনের এই অধ্যাপক বলেন, “দেশের দণ্ডবিধি দেড়শ বছরের পুরানো। সেখানেই তো লেখা আছে আপনি কাউকে টর্চার করতে পারবেন না, কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন না, আপনি কারো প্রাইভেসিতে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না, কাউকে পিটিয়ে হল থেকে বের করতে পারবেন না। এগুলো তো ফৌজদারি অপরাধ এবং মেরে ফেললে তো মৃত্যুদণ্ড হওয়ার কথা। এই অপরাধ যখন হলে হলে হয়, তখন এই রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনী, এই রাষ্ট্রের আদালত, আইন বিচার ব্যবস্থা কোথায় থাকে? যে আইন আছে তাকে কার্যকর করতে হবে।”

আসিফ নজরুলের চার প্রস্তাব: à¦†à¦¸à¦¿à¦« নজরুল সমস্যা সমাধানে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমার কতগুলো প্রস্তাব রয়েছে- প্রথমত, আমি যখন বিদেশে পড়েছি তখন দেখেছি সববার আগে হলে সিট দেয়া হয় প্রথম বর্ষের ছাত্রদের। যখন কেউ প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় তখন তার পরিচিত থাকে না, বন্ধু থাকে না, টিউশনি থাকে না। কিন্তু সে যখন তৃতীয় বর্ষে উঠে তখন সে সবকিছু চিনে যায়। সে জন্য আপনি দেখবেন গণরুম-গেস্টরুমে সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হয় ১ম বর্ষ, ২য় বর্ষ। à§©à§Ÿ বর্ষে উঠলে আর অত্যাচার করতে পারে না। কারণ তখন তার হাতে অপশন থাকে। অত্যাচার করা হলে সে অন্য কোথাও চলে যাবে। তাই আমি আগেও বলছি এখনো বলছি- হলে আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে প্রথম বর্ষকে। যদি আসন না থাকে দরকার হলে ৪র্থ বর্ষকে বের করে দেন। তবুও প্রথম বর্ষকে অবশ্যই আসন দিতে হবে। এই আসন ছাত্রলীগ দিবে না, বিএনপি আমল আসলে ছাত্রদল দিবে না, প্রশাসনকে দিতে হবে।”

দ্বিতীয়ত, প্রতিটি হেলের গেটে সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে হবে। পারমিশন (অনুমতি) ছাড়া একজনও যেন হলে ঢুকতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এটি কোন অসম্ভব ব্যাপার না। তৃতীয়ত, বৈধ ছাত্রের বাইরে অর্থাৎ নিয়মিত ছাত্রের বাইরে একদিনও যারা আছে তাকে অবশ্যই বের করে দিতে হবে। চার বছরের মধ্যে অনার্স শেষ করার কথা এর বাইরে একদিনও যারা থাকবে বের করে দিতে হবে।”

চতুর্থত, হলে হলে একটা করে হটলাইনের ব্যবস্থা করেন। এসএম হলে (সলিমুল্লাহ মুসলিম হল) যদি টর্চার হয় ওই নাম্বারে একটি ম্যাসেজ করবে। যে টর্চার হচ্ছে সে তো ম্যাসেজ দিতে পারবে না কিন্তু যে সুস্থ সে তো পারবে। সেই ম্যাসেজ পাওয়ার সাথে সাথে হাউজ টিউটর প্রভোস্টকে সাথে নিয়ে ছুটে যাবেন। তাদের (প্রশাসনের) যদি মিনিমাম বিবেক থাকতো এত বড় একটা ঘটনার পর (আবরার হত্যা) তারা একটা হট লাইন দিতে পারত।”

আলোচনা সভায় ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, প্রশাসনের সাথে ছাত্র সংগঠনের সম্পর্ক থাকা উচিত ছাত্রদের কল্যাণের জন্য। কিন্তু তারা সম্পর্ক রাখে ছাত্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য। সে কারণে যারা যখন ক্ষমতা থাকেন, ক্ষমতা থাকা ছাত্র সংগঠন নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। হলগুলো ছাত্র সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করলে হলের প্রশাসনের কাজ কি? ছাত্র সংসদের ধারাবাহিতকা থাকলে পরিবর্তন আসবেই। হলে হাউস টিউটর থাকেন, হল প্রাধ্যক্ষ থাকেন- তাহলে কেন একটি ছাত্র সংগঠন হলগুলো চালাবে।’

নুরুল হক বলেন, ‘ছাত্রলীগের বিশ বছরের অবদান কি? কোনো অবদান নেই। বরং শিক্ষার্থীদের কাছে তারা নিপীড়কের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। গত সাত বছরে ছাত্রলীগের হাতে ২৮২ জন শিক্ষার্থী নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভুমিকা থাকা সত্ত্বেও তারা কেন আজ শিক্ষার্থীদের ত্রাসের কারণ হবে? কেন আজ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিতে হয়? যে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে, তারা কেন আজ নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ? শিক্ষার্থীদের ত্রাসের কারণ? 

আরও পড়ুন আপনার মতামত লিখুন

© Copyright -Bangla Runner 2021 | All Right Reserved |

Design & Developed By Web Master Shawon