তোমাদের আগমনে হাজার কলিরা
পাপড়ি মেলে
আধাঁর রজনী শেষে পূবের আকাশে
রক্তিম সূর্য্য দোলে
হৃদয় বীণার তারে নতুনের সুরে সুরে
তোমাদের করছি বরণ
শুভ হোক তোমাদের আগমন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শরীয়তপুর জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন কীর্তিনাশা কর্তৃক আয়োজিত আজকের এই নবীনবরণ, কৃতি সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাননীয় প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী ও সুধীমন্ডলী সকলে আমার স্বশ্রদ্ধ সালাম- আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় নবীন বন্ধুরা,
তোমাদের শুভাগমনে আমাদের শুভ্রস্নাত প্রীতি ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। শিক্ষাজীবনে এক ধাপ উত্তীর্ণ হয়ে জীবন কুসুমকে প্রস্ফুটিত করার দুর্বার বাসনায় তোমরা এসেছ স্বপ্নীল যাত্রাপথের অন্যতম কেন্দ্র প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত-শ্যামল চত্বরে। পবিত্র অঙ্গন তোমাদের সুললিত পদচারণায় মুখরিত হোক।
তোমরা তোমাদের শিক্ষা জীবনের ছোট্ট গন্ডি পেড়িয়ে আজ দেশ সেরা বিদ্যাপীঠে এসেছ। স্কুল- কলেজে সংকীর্ণ পরিসর ও ধরাবাধা নিয়মবিধির মধ্যে চললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসর তার ব্যতিক্রম। এখানকার সামগ্রিক পরিবেশ অনেক বেশি মুক্ত ও উদার। মতামত প্রকাশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ইত্যাকার বিষয়ে তোমরা ভােগ করবে অনেক বেশি স্বাধীনতা । তােমরা এখানে পূর্ণ মানুষের স্বীকৃতিতেই আত্মনির্মাণ ও আত্মবিকাশে সক্ষম হবে।
আমরা জানি, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তাকে রক্ষা করা অধিকতর কষ্টকর। তােমাদের ক্ষেত্রে কথাটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা যে ক্যাম্পাসে পদার্পণ করেছ, সেখানটায় অপার সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে অন্ধকারের অতল কূপে হারিয়ে যাওয়ার অনেক ফাঁদ। তোমাদের শুরু থেকেই নিজেকে নিয়ে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। সময়কে কাজে লাগাতে হবে। তুমি চাইলে এই বিদ্যাপীঠের ইট পাথর-বৃক্ষের পাতা থেকেও ইতিবাচক জ্ঞান আহরণ করতে পারবে, দেশ সেরা শিক্ষক, রাজনীতিবীদ, গবেষক, লেখক, বিতার্কিক, অভিনেতা বা তুমি যা হতে চাও তার সবটাই হতে পারবে।
প্রিয় নবাগত শিক্ষার্থীরা,
আমাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধবিত্ত পরিবার থেকে আসি। আমাদের পরিবার অফুরান স্বপ্ন নিয়ে তাদের ঘামে ভেজা অর্থ নিজে খরচ না করে আমার-তোমার জন্য খরচ করেছে; মানুষের মতো মানুষ হয়ে দেশ ও সমাজের মুখ উজ্জ্বল করার জন্যে। নিজ স্বপ্ন পূরণের তাগিদে শুরু থেকেই তোমাদের জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার রসদ আহরণ করতে হবে।
অনেকেই হয়তো বলবে, বিশ্ববিদ্যালয় লাইফের প্রথম কয়েক বছর পড়াশোনা করবার দরকার নেই, ইনজয় করো, আড্ডা-ঘুরাঘুরি করো, শেষ দিকে এসে নিজেকে প্রস্তুত করবে জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার। যদি এসব কথায় কান দাও তবে তুমি তোমার স্বপ্ন থেকে বিচ্যুত হয়ে গেলে। তাই আমি বলব, তুমি যা হতে চাও তা আজ থেকে হওয়া শুরু করো। শুরু থেকেই তোমরা পড়াশোনায় মনোযোগী হবে। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিতর্ক, লেখালেখি, খেলাধুলা করবে, ভলান্টারি ওয়ার্ক করবে। তবে আগে নিজের একাডেমিক পড়াশোনা ঠিক রেখে বাকিসব করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনে চলতে গেলে নানা প্রতিবন্ধকতা তোমার পথ রোধ করে দাঁড়াতে চাইবে, তোমার স্বপ্নকে ফ্যাকাশে করে দিতে চাইবে কিন্তু ভয় পেলে চলবেনা। সব বাঁধাকে অতিক্রম করে সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যেতে হবে। তোমাদের অনাগত দিনগুলো সুন্দর, মধুময় ও প্রাণ প্রাচুর্যে সমৃদ্ধ হয় উঠুক, এ প্রার্থনা করছি। তোমরা সুখী হও, তোমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক। সবার জন্য শুভ কামনা। আসসালামু আলাইকুম।