Bangla Runner

ঢাকা , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ | বাংলা

শিরোনাম

গ্রীষ্ম, বর্ষা না বসন্ত কোন ঋতু সেরা?  এফ রহমান ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি শাখাওয়াত, সম্পাদক আশিক বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা পাঠানোর ই-মেইল বিশ্বের সবচেয়ে দামি ৫ মসলা Important Quotations from Different Disciplines স্যার এ এফ রহমান: এক মহান শিক্ষকের গল্প ছয় সন্তানকে উচ্চ শিক্ষত করে সফল জননী নাজমা খানম ‘সুলতানার স্বপ্ন’ সাহিত্যকর্মটি কি নারীবাদী রচনা? কম্পিউটারের কিছু শর্টকাট ভালো চাইলে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়াতে শুরু করুন
Home / বাংলাদেশ

আলোচিত যত মৃত্যু:

তিন দশক আগে-পরে একই কারণে প্রাণ যাচ্ছে!

এম.এস.আই খান
সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯ Print


29K

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বেশ কিছু মর্মান্তিক ও ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। চার-পাঁচ দশক আগে ঠিক যেসব কারণে দুর্ঘটনা হত এখনো সেই একই কারণে রেল দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে- মুখোমুখি সংঘর্ষ, সেতু ভেঙে, আগুন ধরে কিংবা রাজনৈতিক নাশকতায় ট্রেনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। দেশের আলোচিত কয়েকটি রেল দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হল-

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম বড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৭২ সালে। ওই বছরের ২ জুন যশোরে ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ৭৬ জন যাত্রী প্রাণ হারান। আহত হন আরো ৫০০ যাত্রী। ৬ বছর ৭ মাস পরে চুয়াডাঙ্গার কাছে একটা ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৯৭৯ সালের ২৬ জানুয়ারি ৭০ জন যাত্রী প্রাণ হারান। আহত হন প্রায় ৩০০ যাত্রী।

চুয়াডাঙ্গা দুর্ঘটনার চার বছর এক মাসের মাথায় ১৯৮৩ সালের ২২ মার্চ ঈশ্বরদীতে ৬০ জন যাত্রী নিহত ও দেড় শতাধিক আহত হন। সেতুর স্প্যান ভেঙ্গে কয়েকটি বগি নিচে শুকনা জায়গায় পড়ে গেলে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

ঈশ্বরদী দুর্ঘটনার এক বছর নয় মাসের মাথায় ১৯৮৫ সালের ১৩ জানুয়ারি খুলনা থেকে পার্বতীপুরগামী সীমান্ত এক্সপ্রেসের কোচে আগুন ধরে গেলে ২৭ জন মারা যায় এবং ২৭ জন আহত হয়।

এক বছর দুই মাস পরে সর্বহারার নাশকতায় ১৯৮৬ সালের ১৫ মার্চে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারার কাছে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নদীতে পড়ে যায়। এতে ২৫ জন যাত্রী প্রাণ হারান এবং ৪৫ জন আহত হয়।

তবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনাটি হয় ১৯৮৯ সালে। ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি টঙ্গীর কাছে মাজুখানে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৭০ জন নিহত এবং ৪০০ জন আহত হন। ৩০ বছর আগে ওই দুর্ঘটনাটিও ছিল দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের কারণে। একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত হন ১৩ জন। আহত হন আরো ১০০ জন।

উত্তরবঙ্গের ‘হিলি ট্র্যাজেডি’। ১৯৯৫ সালের ১৩ জানুয়ারি গোয়ালন্দ থেকে পার্বতীপুরগামী ৫১১ নম্বর লোকাল ট্রেনটি হিলি রেলস্টেশনের এক নম্বর লাইনে এসে দাঁড়ায়। এর কিছুক্ষণ পর সৈয়দপুর থেকে খুলনাগামী আরেকটি আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস একই লাইনে ঢুকে পড়লে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ৫০ জন নিহত এবং দুই শতাধিক আহত হন।

হিলি ট্র্যাজেডির নয় বছর পর ২০০৪ সালেও মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ১৩ জন প্রাণ হারান। ওই বছর চট্টগ্রাম নাউটি এলাকায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে ২০০৭ সালেও। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে আখাউড়া আজমপুর রেলওয়ে স্টেশনে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঝড়ে যায় আরো ২৪টি প্রাণ।

নিয়মিত বিরতিতে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে আসছে রেলে। ২০১০ সালে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেন ‘মহানগর গোধূলি’ ও ঢাকাগামী মেইল ‘চট্টলা’র মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে চট্টলা ট্রেনের একটি বগি মহানগর ট্রেনের ইঞ্জিনের ওপরে উঠে যায়। ওই দুর্ঘটনায় চালকসহ মোট ১২ জন মারা যান।

২০১৭ সালের ৩০ মার্চ মাধবপুরের ইটাখোলা রেলব্রিজ ভেঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেন। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ পাঁচ দিন বন্ধ ছিল। পরের বছর ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ৫ জন নিহত ও ৪৫ জন আহত হয়।

২০১৯ সালের ২৩ জুন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। উপজেলার বরমচাল লেভেলক্রসিং এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের ৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে খালে ছিটকে পড়লে ৬ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৪০ জন।

আর গত ১১ নভেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত শ খানেক যাত্রী। ফলে দেখা যাচ্ছে তিন দশক আগে যে কারণে দুর্ঘটনা ঘটত এখনো সেই একই কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন  যাত্রীরা।

আরও পড়ুন আপনার মতামত লিখুন

© Copyright -Bangla Runner 2024 | All Right Reserved |

Design & Developed By Web Master Shawon